রেভারেন্ড জে ফিলিপস

তার পুরো নাম জিরিমিয় ফিলিপস। এর প্রসঙ্গের আলোচনায় আর এক মিশনারীর নাম এসে যায়, তিনি হলেন এলিনয়ের সাহেব। ১৮৩৮ সালে (মতান্তরে ১৮৩৬) উড়িষ্যার জলেশ্বরে (মতান্তরে বালেশ্বর) আমেরিকান বাপটিস্ট ফরেন মিশন সোসাইটি যে মিশন স্থাপন করেন, এরা হলেন ঐ মিশনের দুই প্রধান। রেভারেন্ড জে ফিলিপস এবং এলিনয়ের, আদিবাসীদের মধ্যে বাইবেল প্রচার করতে গিয়ে বুঝলেন, প্রথমে এদের ভাষা জানা প্রয়োজন এবং এদের লেখা পড়া শেখানো দরকার। তাই ঐ দুই মিশনারীর প্রচেষ্টায় স্কুল যেখানে সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা হয়েছিল।

রেভারেন্ড জে ফিলিপস জলেশ্বরের সাঁওতাল গ্রামে গ্রামে ঘুরলেন। সাঁওতালিদের মধ্যে প্রচলিত গান, ধাঁধা, উপকথা শুনলেন। পরে এগুলো কে সংগ্রহ করে তিনি ১৮৪৫  খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থাগারে প্রকাশ করেন । সাঁওতালি ভাষায় একটিই প্রথম  গ্রন্থ। গ্রন্থ টি বাংলা হরফে ছাপা হয়েছিল। গ্রন্থটির নাম আর এখন জানা যায় না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাঁওতালি ভাষা শেখাকালিন জে ফিলিপস সাঁওতালি শব্দ, কথা এবং গান সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। পরবর্তী সময়ে এগুলোকেই বাংলা অক্ষরে পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন। এতে লাগড়ে গান, পাতা গান এবং কয়েকটি উপকথা রয়েছে। ১৮৫০ সালে রেভারেন্ড জে ফিলিপস আর একটি গ্রন্থের প্রকাশ করেন। গ্রন্থটির নাম ‘সাঁওতালি ভাষা শিক্ষা’। তিনি একখানা ব্যাকরণ গ্রন্থও রচনা করেন। গ্রন্থটি ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির নাম- “An Introduction to the Santali language”. গ্রন্থ টি ইংরেজি তে লেখা হলেও এতে প্রায় পাঁচ হাজার সাঁওতালি শব্দ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ ভাবেই শুরু হয় সাঁওতালি লিখিত সাহিত্যের যাত্রাপথ। পথপ্রদর্শক হিসেবে নিশ্চিত ভাবে স্মরনীয় হয়ে থাকবে রেভারেন্ড জে ফিলিপসের নাম।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.